টাইগারদের ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ আজ

প্রকাশিত: ১২:২৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮

সফরকারী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে আজ ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। সিলেটে প্রথম ম্যাচ হেরে এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে হারলে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হারাবে টাইগাররা। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে দুর্দান্ত দাপটে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে স্বাগতিকরা। টি-টোয়েন্টিতে এ পর্যন্ত ১০ বার মুখোমুখিতে বাংলাদেশ ৪ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ বার জয়ী হয়েছে, ১টি ম্যাচে ফলাফল হয়নি। আজকের ম্যাচটি দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায়। বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং গাজী টিভি ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি ২২ ডিসেম্বর মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা সৌম্য সরকার জানালেন তাদের পরিকল্পনাও। যে পরিকল্পনায় সবার আগে গুরুত্ব পাচ্ছে, শুরুতে উইকেট না হারানো। গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়ন্টিতেও উড়ে গিয়েছিল সফরকারী সাকিব বাহিনী। সেইন্ট কিটসে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা টাইগারদের সাকল্যে সংগ্রহ ছিল ১৪৩ রান। ম্যাচে বৃষ্টি হানা দিলে ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে স্বাগতিকদের জন্য লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ৯৩ রান, যা ৩ উইকেটের খরচায় করে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটরা। বিব্রতকর সেই হারে অবশ্য স্টিভ রোডস শিষ্যরা নুইয়ে পড়েনি। বরং ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ম্যাচেই প্রবল বিক্রমে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ভেন্যুতে তৃতীয় ম্যাচটিও নিজেদের করে নিয়ে দেশের বাইরে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের সৌরভ গায়ে মাখে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ছয় মাসের ব্যবধানে সেই দলটির সঙ্গেই একই অবস্থার মুখোমুখি স্বাগতিকরা। গত সোমবার সিলেটে শাই হোপ ঝড়ে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটে উড়ে গেছে সাকিব বাহিনী। সিরিজে ফিরতে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প নেই। আর টেস্ট ও ওয়ানডেতে দাপুটে জয়ের পর টি-টোয়েন্টিতেও সিরিজ জয়ে তৃতীয় ম্যাচটি যে কোনো মূল্যে নিজেদের করে নিতে হবে। দুর্গম সেই মিশনে পিছপা হচ্ছে না বাংলাদেশ। আর এ ক্ষেত্রে তাদের অনুপ্রেরণা হচ্ছে ফ্লোরিডায় শেষ দুই ম্যাচের অবিস্মরণীয় সেই জয়।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে এসে সেকথাই বলেন সৌম্য সরকার। ওরা শর্ট বল করেছে, আমরা দৌড়ে মারতে গিয়েছি। এটা সাহসের ব্যাপার। শর্ট বলের মধ্যেও জোরে বলে মারতে গিয়েছি। আমরা পিছিয়ে গিয়ে আউট হলে বলা যেত যে আমরা শর্ট বলের ভয়ে আউট হয়েছি। জোরের বল আরো জোরে মারতে গিয়ে আউট হয়েছি। আমরা যদি ক্লেভারলি বুদ্ধি খাটিয়ে প্লেসিং করার চেষ্টা করতাম, টাইমিং করে খেলতাম তাহলে ভালো হতো।
কোনো বুদ্ধির ঘাটতি ছিল হয়তো। আমরা শুরুতেই তাদের মারতে গিয়েছি। আমরা বুদ্ধি খাটিয়ে পেসারদের প্রথম কিছু ওভার যদি আমরা সামলাতে পারতাম, তাহলে শেষের দিকে আরো রান কাভার করতে পারতাম। উইকেট আর্লি পড়ে যাওয়ায় মাঝখানে একটু ধীরগতিতে খেলতে হয়েছে। ওইটাই পরের ম্যাচে চেষ্টা করা হবে। উপরের দিকে আমরা যারা আছি, তারা যদি পাওয়ার প্লে-টা সুন্দরভাবে কাজে লাগিয়ে উইকেটটা হাতে রাখতে পারি, শেষের দিকে ওইটা ভালো হবে।
অন্যদিকে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগের দিন নেটে সাইফউদ্দীনের বলে পায়ে ব্যথা পেয়ে আর প্র্যকটিস করা হয়নি সাকিব আল হাসানের। ম্যাচ শুরুর আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনেও আসেনি বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেদিন ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী পর্বে সঞ্চালক শামীম আশরাফ চৌধুরীর সঙ্গে মিনিটদুয়েক কথা বলেছেন শুধু। তার অনুপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন স্বল্প পরিসরের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিং উপদেষ্টা নেইল ম্যাকেঞ্জি। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে অফিসিয়াল মিডিয়া সেশনেও দেখা মিলল না সাকিবের। তার পরিবর্তে কথা বলেছেন বাঁ-হাতি টপ অর্ডার সৌম্য সরকার।
প্রেস কনফারেন্সের শুরুতেই বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তার কৌশলী জবাব, ‘না, কোনো সমস্যা হয়নি। সাকিব কথা বলবেন নিশ্চয়ই। এই সিরিজেই হয়তো তার দেখা পাবেন আপনারা। ম্যাচের আগে পরে সব প্রেস কনফারেন্সে অধিনায়কের আসতেই হবে এমন তো বাধাধরা নিয়ম নেই।’
অথচ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচেই মিডিয়ার সামনে এসেছিলেন। কিন্তু প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির একটিতেও সাকিব এলেন না। যদিও অধিনায়ক সব ম্যাচের আগে প্রেসের সামনে আসতে বাধ্য নন। প্র্যাকটিসেও সাকিবকে দেখা যায়নি। সাকিবের নাকি একটু জ্বর জ্বর ভাব। গা-টা ম্যাজম্যাজ করছে, তাই ড্রেসিংরুমে এসে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে সোজা টিম হোটেলে ফিরে গেছেন জানান মিডিয়া ম্যানেজার।