চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের গণপিটুনিতে আ’লীগ নেতার মৃত্যু

প্রকাশিত: ৩:১২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০১৯

চট্টগ্রামের পাহড়তলীতে ব্যবসায়ীদের গণপিটুনিতে মহিউদ্দিন সোহেল (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, সোহেলে একজন চাঁদাবাজ। তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ীরা তাকে গণপিটুনি দেয়।

সোমবার দুপুরে নগরীর ডবলমুরিং থানার পাহাড়তলী বাজারে ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। মহিউদ্দিন সোহেল সরকারি কমার্স কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং বর্তমানে এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত।

ওই বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সোহেল একজন চাঁদাবাজ। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করত। তার অত্যাচারে পাহাড়তলী বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ ছিল।

তবে সোহেলের পরিবারের দাবি, বাজারে মাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ করত সোহেল। এ কারণেই তাকে কৌশলে গণপিটুনির নামে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, মহিউদ্দিন সোহেল পাহাড়তলী বাজারে বিভিন্ন দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে নানা অজুহাতে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। বাজারে আসা পণ্যবাহী ট্রাক থেকেও নির্দিষ্ট হারে টাকা আদায় করতেন তিনি। দীর্ঘদিন থেকেই তার এমন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে ব্যবসায়ীরা।

সোমবার সকালে ট্রাক থেকে ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা চাঁদা আদায় করছিল সোহেল। এতে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে সোহেলকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

পরে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা বাজারে অবৈধভাবে গড়ে তোলা সোহেলের একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

ব্যবসায়ীরা জানান, সন্ত্রাসীদের দিয়ে বাজারের দোকানদার-শ্রমিকদের ওই অফিসে ডেকে নিয়ে যেতেন সোহেল। নানাভাবে টর্চার করে তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হতো। তিনি কখনও মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আবার কখনও চসিক মেয়রের লোক বলে নিজেকে পরিচয় দিতেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। পরে হাসপাতালে সোহেলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

পতেঙ্গায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা : এদিকে পতেঙ্গায় মোহাম্মদ ফারুক (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ পতেঙ্গা থানার পুরাতন কন্ট্রোল মোড় এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

পুলিশের ধারনা, চুরির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া জানান, এক মাস আগে মোবাইল চুরির একটি মামলায় জামিনে বের হয় ফারুক। ১৩টি মোবাইল ফোনসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে। নিহতের বড় ভাই জসিম কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।