ঐক্যফ্রন্টের মনসুর-মোকাব্বিরের শপথের বিষয়ে যা বলছেন শীর্ষ নেতারা

প্রকাশিত: ২:৪১ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান। ফাইল ছবি

গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্য (এমপি) শপথ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বাজছে ফের অনৈক্যের সুর।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাত্র আটটি আসনে জয়লাভ করে। বিএনপির ছয়জন এমপি শপথ নেবেন না বলে দলীয় ফোরামে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

কিন্তু গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুইজন এমপি মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া-কমলগঞ্জ) আসনের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও সিলেট-২ আসনের মোকাব্বির খান শপথ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করলেও ভিন্ন কথা বলছেন ফ্রন্টটির শীর্ষ নেতারা। তাদের মতে, শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত এখনও বহাল আছে।

গণমাধ্যমকে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য না দেয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন তথা জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য সুদৃঢ় ও অটুটু আছে।

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের মতে, যে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, সেখানে শপথ নিয়ে সংসদে যাওয়া মানেই আওয়ামী লীগের একতরফা এ নির্বাচনকে মেনে নেয়া।

ফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এ দুজন শপথ নিলে ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এমন পরিস্থিতিতে শিগগিরই ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক ডাকা হতে পারে।

তবে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন রয়েছেন দেশের বাইরে। তিনি ফেরার পরই ঐক্যফ্রন্টের পাশাপাশি গণফোরাম জরুরি বৈঠকে বসতে পারে। সেই বৈঠকেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সূত্র জানায়, গণফোরামের নীতিনির্ধারকরা শপথ নেয়ার পক্ষে নন। তাদের দুজন শপথ নিচ্ছেন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তারা দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন।

কামাল হোসেন বিষয়টি নিয়ে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন। সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠান মোস্তাফা মহসীন মন্টু।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ড. কামাল হোসেনের একটি বক্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ড. কামাল হোসেন কোনোভাবেই বলেননি যে, গণফোরাম থেকে নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। এছাড়া ঐক্যফ্রন্টে কোনো ‘অনৈক্য’ নেই।

এ প্রসঙ্গে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর যুগান্তরকে বলেন, আমরা কখনও বলিনি শপথ নেব না। ড. কামাল হোসেনও বলেছেন, শপথ নেয়ার ব্যাপারে আমরা ইতিবাচক। আর এটাই আমাদের কথা। এর বাইরে অন্যরা কে কী বলেছে, তা আমি জানি না। সময় তো আছে, তাড়াহুড়ার কিছু নেই। ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নিলেই হবে।

সিলেট-২ আসনের মোকাব্বির খান বলেন, গণফোরাম সভাপতি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন। তিনি আসার পর আমাদের দলীয় ফোরামের বৈঠকে শপথের বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে শপথ গ্রহণের বিষয়ে আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। ফোরামের সিদ্ধান্তও ইতিবাচকই হবে বলে আশা করি।

তবে তাদের এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদের ফ্রন্টের কোনো সংসদ সদস্য শপথ নেবে না এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।