উপজেলা নির্বাচনেও বিশাল জয়ের টার্গেট

প্রকাশিত: ১:২৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০১৯

বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জাতীয় নির্বাচনে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই ধারাবাহিকতা উপজেলা নির্বাচনেও ধরে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল শনিবার বিকেলে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যৌথসভা শেষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ চাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে নেতাদের আলোচনায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি। গতকাল যারা বক্তব্য রাখেন তাদের মধ্যে আছেন- দলটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, এইচ টি ইমাম, ড. হোসেন মনসুর, মুকুল বোস, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সদস্য এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, আখতারুজ্জামানসহ কয়েকজন নেতা।
বৈঠকে বিগত নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে আমাদের বিশাল বিজয় এসেছে। কোনো আসনে ভালো ফলাফল হয়েছে, কোনোটায় হয়নি। ভালো ফলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। তিনি যেসব আসনে তুলনামূলক ফল ভালো হয়নি সেগুলোতে ভালো না হওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে উপস্থিত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দেন। জাতীয় নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের ধারাবাহিকতা আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এই নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের মধ্য দিয়েই বিরোধীদের সব ধরনের সমালোচনার জবাব দিতে হবে। তৃণমূল আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে আরো গতিশীল করতে খুব শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হবে বলে বৈঠকে জানান শেখ হাসিনা। এ ছাড়া আগামীতে দলের সিনিয়র নেতাদের সংগঠনের কাজে মনোনিবেশ করারও আহবান জানান তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য গঠিত ১৫টি উপকমিটির সদস্যদের কাজের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কমিটির সবাইকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে খুব শিগগিরই প্রতিটি উপকমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলবেন বলেও বৈঠকে জানিয়েছেন তিনি। বৈঠকের একপর্যায়ে নির্বাচনের সময় বিশেষ দায়িত্ব পালনকারী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হোসেন ও সদস্য এস এম কামাল হোসেনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনী কাজের জন্যই তাদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। নির্বাচনে তারা অনেক পরিশ্রম করেছেন। তাদের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেটা তারা ভালোভাবে পালন করেছেন। এ সময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামেরও ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ইশতিহার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের ইশতিহার জনগণের কল্যাণের জন্য। ইশতিহারে যা যা আছে, তার প্রত্যেকটিই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও দলের নেতাদের যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ আমরা চাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ রেখে যেতে। আগামীতে জাতীয় বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের বিষয়েও আলোচনা করা হয় যৌথসভায়। আগামী ১৯ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্বাচন পরবর্তী আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশকে চিরস্মরণীয় করে রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ওই সমাবেশকে সফল করার বিষয়ে নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়।