উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ

প্রকাশিত: ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০১৯
আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা মানুষের। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি

পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে ওইসব অঞ্চলে জনজীবনে একধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘পাবক’ থাইল্যান্ড উপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি দক্ষিণ আন্দামান সাগরে পৌঁছতে পারে। এর প্রভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

অধিদফতর জানায়, পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, শ্রীমঙ্গল, ভোলা ও বরিশাল অঞ্চলসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী অঞ্চলে ভোরের দিকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও কম তাপমাত্রায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বেলা বাড়ার পরও সূর্যের তাপ না বাড়ায় শীত কমছে না। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, দিনের তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নামলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে মাঝারি এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে। এখানে এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে।

শুক্রবার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। এখন আবার তাপমাত্রা নামছে। তবে এ মৌসুমে ২৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।

তাপমাত্রা কমতে থাকায় পদ্মাপারের ছিন্নমূল মানুষ শীতের তীব্রতায় দুর্বল হয়ে পড়েছেন। উত্তরের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সকালে ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে ভোরের সূর্যের দেখা মিললেও থাকছে না উত্তাপ। ফলে সন্ধ্যায় খোলা আকাশের নিচে থাকা শীতার্ত মানুষের শরীরে উষ্ণতা ছড়াতে খড়কুটো জ্বালাতে হচ্ছে।

শীতে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। তারা আক্রান্ত হচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগে। হাসপাতালে বাড়ছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত নবজাতক শিশুর সংখ্যাও। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন অ্যাজমায় আক্রান্ত রোগীরা। ফলে শীতে অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে।

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক আজাদ জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় সব বয়সের মানুষ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। তবে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।

ঢাকা আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে রাজশাহীর পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন আরও বলেন, ৩-৪ দিন রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। বয়ে যেতে পারে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় দিনের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।