আর একটি মামলায় জামিন পেলেই কারামুক্ত হবেন ইরফান সেলিম

প্রকাশিত: ৮:০০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২১

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (সাময়িক বহিষ্কৃত) মোহাম্মদ ইরফান সেলিম। এ মামলায় জামিন পেলেই তিনি কারামুক্ত হবেন।

গত বছরের অক্টোবরে ইরফান সেলিমকে অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাস ও বিদেশি মাদক রাখার দায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইতোমধ্যে ওই দুই মামলায় আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া র‌্যাবের করা অস্ত্র ও মাদক আইনে করা দুই মামলা থেকেও তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারিক আদালত।

ইরফান সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ বলেন, ‘র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদণ্ড দেয়া দুই মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া র‌্যাবের করা অস্ত্র ও মাদক আইনে করা দুই মামলায় অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এখন নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে করা মামলাটি রয়েছে। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয়া হয়েছে। আমরা এই মামলায় তার জামিনের আবেদন করবো। আশা করি আদালত তার জামিন মঞ্জুর করবেন। যেহেতু তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই, তাই এ মামলায় জামিন পেলে তিনি কারামুক্ত হতে পারবেন।’

মাদক মামলায় ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি

মাদক আইনে করা মামলায় কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১ মার্চ) ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তাকে অব্যাহতি দেন। গত ৫ জানুয়ারি ইরফানকে অব্যাহতির সুপারিশ করে মাদক ও অস্ত্র মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পরিদর্শক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

ওয়াকিটকি ও বিদেশি মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত

গত বছরের ২৫ অক্টোবর নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। এ সময় ইরফান সেলিমের গাড়ি তাকে ধাক্কা দেয়। এরপর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেল থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে নেমে ইরফান সেলিম ও তার সঙ্গে থাকা অন্যরা ওয়াসিফ খানকে কিল-ঘুষি মারেন এবং হত্যার হুমকি দেন। এ সময় তার স্ত্রীকেও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন অভিযুক্তরা।

পরদিন (২৬ অক্টোবর) সকালে ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী মো. জাহিদুল মোল্লা, এ বি সিদ্দিক দিপু ও গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাত দু-তিনজনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ আহমদ খান। ওই দিনই পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা হাজী সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিমকে এক বছর কারাদণ্ড দেন। ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের সাজা দেয়া হয়।

অস্ত্র মামলা থেকে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি

ইরফান সেলিমকে অস্ত্র মামলা থেকেও অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ অস্ত্র মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ইরফান সেলিমকে অব্যাহতি দেন।

 

মাদক মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ইরফান সেলিম

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমামের আদালতে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ইরফান সেলিমকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এ প্রতিবেদন দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলায় ইরফান সেলিমের জামিন

এদিকে ইরফান সেলিমের দুই মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই দুই মামলায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। গত ৫ জানুয়ারি ইরফান সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধর করেন ইরফান ও তার সঙ্গীরা

২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর ইরফান সেলিমকে অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাস ও বিদেশি মাদক রাখার দায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর : ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগে ইরফান সেলিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়েছে ডিবি পুলিশ।গত ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্তকারী ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মমিনুল হক এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগামী ২১ এপ্রিল মামলাটির ধার্য তারিখ রয়েছে।

অভিযোগপত্রে উল্লিখিত অন্য আসামিরা হলেন- ইরফান সেলিমের দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা, এ বি সিদ্দিক দিপু, গাড়িচালক মিজানুর ও রিপন কাজী। আসামিদের মধ্যে পলাতক রিপন কাজী বাদে সবাই রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রয়েছেন।